ডিজিটাল মার্কেটার হবেন কিন্তু আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সার্টিফিকেট থাকবে না তা কি করে হয়? গুগল, ফেসবুক সহ বিশ্বের বড় বড় জায়ান্ট কোম্পানির ডিজিটাল মার্কেটিং সার্টিফিকেট কি করে অর্জন করা যায় সে সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা করবো।
ডিজিটাল মার্কেটিং সার্টিফাইড হওয়া কেন প্রয়োজন
আপনি যেকোন সেক্টরেই পড়াশোনা করেন না কেন সেই সেক্টরে আপনার সার্টিফিকেট আছে, কিন্তু আপনি সাধণা করে ডিজিটাল মার্কেটিং করবেন এর কোন স্বীকৃতি কেন থাকবেনা? প্রফেশনাল ডিজিটাল মার্কেটার হতে হলে সার্টিফাইড হওয়ার বিকল্প নেই।
আপনার জ্ঞান ও দক্ষতার স্বীকৃতি প্রদান করবে ডিজিটাল মার্কেটিং সার্টিফিকেট।
যেকোন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং সার্টিফিকেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইটে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা নিগৃহীত হয়, সার্টিফাইড হলে খুব ভালভাবে মার্কেটপ্লেসে প্রবেশ করা যায়।
বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং এর জবে সার্টিফিকেট অত্যান্ত গুরুত্ব বহন করে।
হাজারো আধা আধা ডিজিটাল মার্কেটার এর ভিড়ে নিজের স্কিল তুলে ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং সার্টিফিকেট।
গুগল এমন একটি অবিশ্বাস্য প্ল্যাটফর্ম যা আপনাকে বাস্তব-বিশ্বের উদাহরণ সহ ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে সহায়তা করবে। যারা একদম নতুন, ডিজিটাল মার্কেটিং সবে মাত্র শিখা শুরু করেছেন বা শুরু করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য গুগল ডিজিটাল গ্যারেজের এই কোর্সটি এক কথায় অসাধারণ। কোর্সটি যেকোন সময়, যেকোন স্থানে ও যেকোন ডিভাইসে করা যাবে। কোর্সটি তাদের জন্য ডিজাইন করা, যারা ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রিতে তাদের ক্যারিয়ার গড়তে চান ও সবকিছু একদম বেসিক থেকে শুরু করতে চান।
কোর্স থেকে শিখার বিষয়-
– আপনি শিখতে পারবেন কি করে অনলাইনে আপনার ব্যবসায়কে প্রতিষ্ঠিত করবেন ও কি করে টার্গেট কাস্টমারদের মার্কেটিং করবেন।
– অনালাইন এড ও সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জানতে পারবেন।
– এই কোর্সটিতে আপনাকে প্র্যাকটিক্যাল এর উপর জোর দেওয়া হয়নি তবে বেসিক ধারণা দেওয়া হবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং ও সাইবার সিকিউরিটির উপর।
ফেসবুক স্বীকৃত একটি অসাধারণ সার্টিফিকেট হচ্ছে ফেসবুক ব্লুপ্রিন্ট। ফেসবুক এড ও মার্কেটিং বিষয়ক বেশ কিছু ফ্রি কোর্স সেখানে বিদ্যমান আছে। এই কোর্সগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন সবাই ফেসবুক এড ও মার্কেটিং শিখে নিজের ব্যবসায়ে তা অনায়াসে প্রয়োগ করতে পারে। ফেসবুক মার্কেটিং বিষয়ক বেশ কিছু ভিডিও টিউটোরিয়াল ও বেশ কিছু কোর্স মেটারিয়াল নিয়ে কোর্সটি সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন প্রফেশনাল মার্কেটার যারা দীর্ঘদিন ধরে ডিজিটাল মার্কেটিং এ জড়িত আছেন তারাই কোর্সটি সুন্দর করে সাজিয়েছেন। এই কোর্সটিতে বেশ কিছু এসাইমেন্ট ও পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এই কোর্সটি শেষ করে ফেসবুক থেকে সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে।
কোর্স থেকে শিখার বিষয়-
– ফেসবুক এড ও মার্কেটিং এর গুছানো ও স্পষ্ট ধারণা পাবেন যা আপনার ব্যবসায়কে সল্প বিনিয়োগে বেশি অর্জনে সাহায্য করবে।
– অনলাইন এড বিষয়ক যেমন ফেসবুকে ব্র্যান্ড গড়ে তোলা, ফেসবুক এডের খুঁটিনাটি, এডের ইনসাইট বা তথ্য বিশ্লেষণ, ক্যাম্পেইন পারফোমেন্স ইত্যাদি এড ম্যানেজার ব্যবহার করে কি করে সুন্দরভাবে করা যায় তা জানতে পারবেন।
– কি করে সুন্দরভাবে এড তৈরি করা যায় ও এড তৈরি করার বিষয়ে ফেসবুকের দিকনির্দেশনা বা গাইডলাইন কি তা বিস্তারিত জানতে পারবেন।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন কোর্সের সমৃদ্ধ সাইট হলো ইউডেমি। তাদের প্রিমিয়াম কোর্সের পাশাপাশি রয়েছে অনেক ফ্রি কোর্স। ডিজিটাল মার্কেটিং সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য ইউডেমি একটি সর্বজন স্বীকৃত প্ল্যাটফর্ম। ডিজিটাল মার্কেটিং এর ২৩ টি বিষয়কে একটি কোর্সে নিয়ে এসে কোর্সটিকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। ৩২ ঘন্টার এই দীর্ঘ কোর্সটিতে রয়েছে ২৩ টি অধ্যায়, ১৯ টি আর্টিকেল ও ২৮ টি রিসোর্স।
কোর্স থেকে শিখার বিষয়-
ডিজিটাল মার্কেটিং এর লেটেস্ট টপিক ও ট্রেন্ডস সম্পর্কে জানতে পারবেন।
কিভাব একটি ব্যবসায়ের ব্র্যান্ড গড়ে তোলা যায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে।
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, পিন্টারেস্ট ইত্যাদি) সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাবেন।
গুগল এডস, গুগল এনালাইটিক্স, ব্লগিং, ভিডিও মার্কেটিং, পডকাস্টিং, কোরা, ইমেইল মার্কেটিং সহ বিভন্ন টপিকের একটি সমৃদ্ধ কোর্স এটি, কোর্সটিতে ফটোশপ সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হবে।
গুগল এনালাইটিক্স ব্যবহার করে একটি ওয়েবসাইটের ডাটা এনালাইসিস করা হয় ও এ বিষয়ে মার্কেটিং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়। গুগল এনালাইটিক্স সার্টিফিকেশন কোর্সে আপনাকে একটি ডেমু গুগল এনালাইটিক্স একাউন্ট দেওয়া হবে। সেটি পর্যালোচনার সাপেক্ষে কিছু প্রশ্নেরও উত্তর দিতে হবে। মূলত ৪ টি প্রধান ভিডিও টিউটোরিয়ালের পাশাপাশি আরো বেশ কিছু প্রাসঙ্গিক ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখানো হয়। ভিডিওগুলো হলো-
গুগল এনালাইটিক্স ফর বিগেনার
এডভান্স গুগল এনালাইটিক্স
ই-কমার্স ডাটা এনালাইসিস
গুগল ট্যাগ ম্যানেজার ফান্ডামেন্টাল
এই ভিডিওগুলোর ভিত্তিতেও গুগল এনালাইটিক্স সার্টিফিকেশনের পরীক্ষার প্রশ্ন করা হয়। পরীক্ষায় শতকরা ৮০ ভাগ নম্বর পেলে তবেই সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
কোর্স থেকে শিখার বিষয়-
একটি ওয়েবসাইটের ডাটা ব্যবহার ও বিশ্লেষণ করতে পারবেন।
কিভাবে গুগল এনালাইটিক্স একাউন্ট খোলা যায় ও এনালাইটিক্স রিপোর্ট তৈরি করা যায় এ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ভিজিটরদের অডিয়েন্স, একুইজেশন, বিহেভিওর ও কনভার্সন এই চারটি ক্যাটাগরিতে এনালাইটিক্স রিপোর্ট তৈরি ও বিশ্লেষণ করতে পারবেন।
ওয়েবসাইটে কোন সময়ে, কতজন, কোন স্থান হতে, কোন পেজ ভিজিট করেছে তার দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক রিপোর্ট নিয়ে বিশ্লেষণ করতে পারবেন ও ওয়েবসাইটের মান উন্নয়ন ও মার্কেটিং বিষয়ক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
আপনি ডেমু একাউন্ট ব্যবহার করে ধারণা নিতে পারবেন গুগল এনালাইটিক্স কিভাবে কাজ করে।
গুগল এডস সার্টিফিকেশন সকল ডিজিটাল মার্কেটারের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ সার্টিফিকেট। নিজের যোগ্যতা ও স্কিল প্রমাণ করার একটি আকর্ষণীয় মঞ্চ হলো গুগল এডস সার্টিফিকেট। এই সার্টিফিকেট অর্জন করতে হলে প্রয়োজন প্রচুর প্রিপারেশন ও পড়াশোনা। ৭৫ মিনিটের একটি পরীক্ষা দিয়ে ও সেখানে শতকরা ৮০% নম্বর পেলে তবেই মিলবে সার্টিফিকেট।
গুগল এডস সার্টিফিকেশনের গুরুত্ব
বিভিন্ন কোম্পানিকে গুগলে এড দেওয়ার জন্য একজন সার্টিফাইড ব্যক্তির প্রয়োজন হয়। ফলে আপনি যেকোন কোম্পানির পক্ষ থেকে গুগলে এড রান করতে পারবেন।
গুগল এডস সার্টিফাইড হলে আপনি বেস্ট এড রান করতে পারবেন ফলে আপনি সল্প সময়ে বিজ্ঞাপন বিনিয়োগ উঠিয়ে আনতে সক্ষম হবেন।
এডের ব্যয়, কিওয়ার্ড কম্পিটিশন ও কিওয়ার্ড র্যাংকিং সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন ও যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারেবেন।
৬ টি ক্যাটাগরিতে গুগল এই সার্টিফিকেট প্রদান করে যথা-
গুগল এডস ডিসপ্লে সার্টিফিকেশন
গুগল এডস সার্চ সার্টিফিকেশন
গুগল এডস মিজারমেন্ট সার্টিফিকেশন
গুগল এডস ভিডিও সার্টিফিকেশন
শপিং এডস সার্টিফিকেশন
গুগল এডস এপস সার্টিফিকেশন
গুগল এডস ফান্ডামেন্টাল ছাড়াও আরও ৬ টি বিষয়ের যেকোন একটির পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করা যায়। কিন্তু গুগল এনালাইটিক্সের মত এখানে ভিডিও দেখে পরীক্ষা দেওয়ার সিস্টেম নেই, ফলে এটি অধিকতর কঠিন পরীক্ষা।
আপনি যদি ৩৫ কোটি একটিভ টুইটার ব্যবহারকারীর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তাদেরকে মার্কেটিং করতে চান তাহলে মার্কেটিং লিডারশিপ উইথ টুইটার ফ্লাইট স্কুল একটি সুন্দর প্ল্যাটফর্ম হবে আপনার জন্য। টুইটার ফ্লাইট স্কুল বিভিন্ন এজেন্সিকে মার্কেটিং বিষয়ে হেল্প করতে গঠন করা হয়েছিল কিন্ত ২০১৬ সাল থেকে এই কোর্সটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
এই কোর্সটিকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন বিজনেস পেজগুলো তাদের টার্গেট কাস্টমার খুঁজে পেতে পারে, তাদের মার্কেটিং করতে পারে ও মার্কেটিং এর ডাটাগুলো বিশ্লেষণ করতে পারে।
৫টি মডিউলে কোর্সটিকে সাজানো হয়েছে। প্রত্যেকটি মডিউলের সময়সীমা ১০-১৫ মিনিট। কোর্সটিতে বিভিন্ন পরিসংখ্যান, কেস স্টাডি ও দৃশ্যপট বর্ণনা করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের বুঝানোর সুবিধার্তে। প্রত্যেকটি মডিউলে একটি করে টেস্ট নেয়া হবে, সবগুলো মডিউল সফলভাবে শেষ করলে আপনি টুইটার স্বীকৃত একটি সার্টিফিকেট পাবেন।
কোর্স থেকে শিখার বিষয়-
টুইটার ট্রেন্ডিং বিষয় সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
শিখতে পারবেন টুইটার থেকে কিভাবে টার্গেট কাস্টমার সেট করতে হয়।
টুইটারের বেস্ট প্র্যাকটিস অর্থাৎ কোন বিষয়গুলো মেনে চললে ভালো রেসপন্স পাবেন তা জানতে পারবেন।
টুইটারে এড দেওয়া ও এডের ডাটা বিশ্লেষণ করতে পারবেন।
কিভাবে টুইটারে বিজনেস ব্র্যান্ড ও পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরি করা যায় এই সম্পর্কে জানতে পারবেন।
টুইটার এড ম্যানেজার ও টুইটার ভিডিও মার্কেটিং সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
মযের প্রতিষ্ঠাতা র্যান্ড ফিশকিন তাদের ওয়েবসাইটে ও ইউডেমিতে এসইও ট্রেনিং এর কোর্সটিকে অন্তর্ভুক্ত করেন। এই কোর্সটি ৩.৫ ঘন্টাব্যাপী এসইও এর উপর বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। ইউডেমি থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার স্টুডেন্ট এই কোর্সটি সম্পন্ন করেছে। এই কোর্সটিতে আপনাকে প্র্যাকটিক্যাল এর উপর জোর দেওয়া হয়নি বরং কোর্সটি থিওরিটিক্যালের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
কোর্স থেকে শিখার বিষয়-
বেসিক এসইও স্ট্রেটেজি ও তা ডেভেলপমেন্ট করার উপায় শিখানো হবে।
ওয়েবসাইটের এসইও অডিট সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বেসিক কিওয়ার্ড রিসার্চ ও বেসিক অন পেজ এসইও সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ব্যাকলিংক তৈরি করা সম্পর্কে বেসিক ধারণা পাবেন।
সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে কি করে রেজাল্ট প্রদর্শিত হয় এই ব্যপারে ধারণা পাবেন।
ডিজিটাল মার্কেটাররা এক কথায় বলে থাকেন কন্টেন্ট ইজ কিং। অর্থাৎ ওয়েবসাইটের মূল হচ্ছে কন্টেন্ট। কন্টেন্ট মানসম্পন্ন না হলে যেমন সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক পাওয়া যাবে না ও ওয়েবসাইটে ভিজিটরও বাড়বে না। ১৪টি কন্টেন্ট, ৫৫ টি ভিডিও ও ১১ টি কুইজ টেস্টের মাধ্যমে কোর্সটিকে সাজানো হয়েছে। পুরো কোর্সের সময়কাল ৬ ঘন্টা ১৬ মিনিট।
hubspot-certification
কোর্স থেকে শিখার বিষয়-
কিভাবে মানসম্পন্ন কন্টেন্ট তৈরি করা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের জন্য যেমন সার্চ ইঞ্জিন, সোশ্যাল মিডিয়া, ব্লগ ইত্যাদি। পাশাপাশি ভিডিও কন্টেন্ট মার্কেটিং সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
কন্টেন্টের ভিজিটর বাড়ানোর জন্য যথাযথভাবে কন্টেন্ট মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে পারবেন।
এমন কন্টেন্ট তৈরি করতে পারবেন যা সার্চ ইঞ্জিন ও ভিজিটর উভয়ে পড়তে পারে। অর্থাৎ এসইও ফ্রেন্ডলি কন্টেন্ট তৈরি করতে পারবেন।
কন্টেন্ট আইডিয়া তৈরি করা ও দীর্ঘমেয়াদি কন্টেন্ট মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বিশ্বখ্যাত ইমেইল মার্কেটার রিচার্ড লিন্ডারের তত্ববধানে ইমেইল মার্কেটিং এর এই কোর্সটি এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন যে কেউ বিগেনার থেকে এডভান্স লেভেলের ইমেইল মার্কেটার হতে পারবে। ৭ টি মডিউলে ৬ ঘণ্টায় কোর্সটিকে বিন্যস্ত করা হয়েছে।
কোর্স থেকে শিখার বিষয়-
ইমেইল মার্কেটিং ও লিস্ট বিল্ডিং সম্পর্কে ধারণা রয়েছে।
কিভাবে ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য একটি মার্কেটিং ক্যালেন্ডার তৈরি করা যায়।
কিভাবে ইমেইল ট্যমপ্লেট তৈরি করতে হবে বা ইমেইল ডিজাইন করতে হবে।
ইমেইল ক্যাম্পেইন করা ও ইমেইল রেজাল্ট বিশ্লেষন করা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
পরিশেষে বলি
ডিজিটাল মার্কেটিং সার্টিফিকেট অর্জনের ফলে একজন ডিজিটাল মার্কেটার কাজের যোগ্যতার স্বীকৃতি পায়। নিজেকে ডিজিটাল মিডিয়ায় উপস্থাপনের জন্য এসব ডিজিটাল মার্কেটিং সার্টিফিকেট খুবই গুরুত্ব বহন করে। ডিজিটাল মার্কেটিং সার্টিফিকেট অর্জন করলে নিজের স্কিল বাড়বে ও প্রফেশনাল লাইফে বেনেফিটেড হওয়া যাবে।
একজন ডিজিটাল মার্কেটার হতে চাইলে বিভিন্ন বাধা বিপত্তি ও চড়াই উৎরাই পার হতে হয়। একটি বাস্তব সত্য কথা, ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন শর্টকাট নেই। অধ্যবসায়, সাধনা আর প্র্যাকটিস নিয়মিত চালিয়ে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই। একমাস বা তিনমাসের কোর্স করে আপনি হয়তো কিছু আইডিয়া পাবেন তবে মার্কেটাও হওয়ার পথ বহু দূর।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর চলমান কোর্সগুলো কেমন?
আজকাল বহু মুখোরোচক কোর্স দেখতে পাওয়া যায়, এক মাসে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখুন কিংবা ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে আয় করুন লক্ষ লক্ষ টাকা। চমকদার এসব বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে কত মানুষ কত টাকা হারিয়েছেন তা হিসেবের বাইরে।
ট্রেনিং সেন্টারের প্রতারণা
এমনও শোনা যায়, বিভিন্ন কোর্স অফার করে বলা হয়, যত মানুষকে এই কোর্স করাতে পারবেন তত বেশি কমিশন পাবেন। ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয়ের চেয়ে কোর্স বিক্রয় করে কমিশন খাওয়া মানুষদের ডিজিটাল মার্কেটার হওয়া হয়তো স্বপই থেকে যায়।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর চলমান ট্রেনিং সেন্টারের কোর্সগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই প্রতারণাপূর্ণ। একজন মার্কেটার হওয়ার জন্য যতটুকু শিক্ষা দরকার তার বেশিরভাগই প্রদান করতে পারে না এসব ট্রেনিং সেন্টারগুলো। ফলে অনেক আশা নিয়ে ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হয়েও মার্কেটপ্লেসে সফল হতে পারে না বেশিরভাগ মানুষই। তবে স্রোতেও বিপরীতে বেশ কিছু ভাল ট্রেনিং সেন্টারও আছে। সেসব যায়গা থেকে ভালো কিছু মার্কেটারও বের হয়েছে। কোন কোন ট্রেনিং সেন্টার থেকে কোর্স করা উচিত তা আমরা আর্টিকেলের শেষের দিকে আলোচনা করেছি।
ব্যবসায়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব
আপনি ডিজিটাল হোন বা না হোন দুনিয়া ডিজিটাল হচ্ছে। ব্যবসায়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োগ ব্যপকভাবে বাড়ছে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব সল্প পরিসরে বলে শেষ করা সম্ভব নয়। তবে এক কথায় এটা বলা যায়, বর্তমান পৃথিবীর এক নম্বর মার্কেটিং হাতিয়ার হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং।
দুনিয়া ডিজিটাল হচ্ছে
ডিজিটাল মার্কেটিং এখন 4th Industrial Revolution এর অংশ। আপনি ডিজিটাল দুনিয়া ছাড়া একটি সাদাকালো চিত্রের বেশি কিছুই দেখতে পারবেন না। ইন্টারনেট প্রযুক্তি বিশ্বকে একটা সুতোয় গেথে দিয়েছে। যেখানে মানুষ পরিবারকে সময় দেওয়ায় চাইতেও বেশি সময় ব্যয় করে। করবেই না কেন? অনেকের তো শুধু নেশা নয়, এই ডিজিটাল দুনিয়া তার পেশাও বটে!
মানুষ যখন Facebook, Google, YouTube, Twiter, LinkedIn, E-mail এ সময় ব্যয় করছে অহরহ তখন কোম্পানিগুলো এই মিডিয়াগুলোকে বেছে নিয়েছে মার্কেটিং এর হাতিয়ার হিসেবে। এই জগৎ এমন একটা জগৎ যেখানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও এড দিতে পারে।
ডিজিটাল মার্কেটিং আলাদিনের যাদুর চেরাগ
আপনি যদি একটা ইউনিক আইডিয়া বের করতে পারেন ও তার ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারেন তবে আপনার পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না। একটু চিন্তা করুন সাম্প্রতিক কয়েকটি বছরে ডিজিটাল মার্কেটিং কি করে প্রভাব বিস্তার করেছে। কি করে একটি আইডিয়াকে আকাশচুম্বী সফলতা দিয়েছে। Pathao, Sohoz, Uber, Foodpanda তাছড়াও বিশ্বখ্যাত Amazon, Alibab, E-Bay ই-কমার্স সাইটগুলো কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং প্রয়োগ করে সফলতার শীর্ষে অবস্থান করছে।
একটু অপেনলি বলি, পাঠাওয়ের উদ্যোক্তারা যদি ডিজিটালি ব্যবসা বৃদ্ধি না করে যদি একটা চাউলের আড়ৎ দিত কিংবা মার্কেটে একটা দোকান দিত তাহলে এই অবিশ্বাস্য সফলতা পেত?
কাস্টমাররা সবাই এখন অনলাইনে
ইন্টারনেটের বিকাশের সাথে সাথে লোকেরা তাদের বেশিরভাগ সময় অনলাইনেই কাটাচ্ছে। কোটি কোটি মানুষ বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। এটি আমাদের প্রতিদিনের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং বিনোদনমূলক অংশে পরিণত হয়েছে। লোকেরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে, ভিডিও দেখছে, চ্যাট করছে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ফিলিংস প্রকাশ করছে। তাহলে, আপনি কেন তাদের আগ্রহের দিকে লক্ষ্য রাখছেন না?
প্রতিযোগীরা সবাই এখন অনলাইনে
এটি অবাক হওয়ার মতো বিষয় নয়, আপনি কেবল গুগলে নিজের পণ্য এবং সেবা সম্পর্কে সার্চ করুন, আপনার হাজার হাজার প্রতিযোগী খুঁজে পাবেন। ইতিমধ্যে তারা অনলাইনে তাদের অনলাইন উপস্থিতি সম্পর্কে জানাতে অনলাইন প্রোফাইল তৈরি করেছে।
একসাথে অসংখ্য মানুষকে টার্গেট করা সম্ভব
একটি নির্দিষ্ট সময়ে আপনি অফলাইনে অনেক লোকের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন না। তবে আপনি ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষকে একসাথে ম্যাসেজ দিতে পারবেন।
এক্স্যাক্ট টার্গেট কাস্টমার সেট করতে পারবেন
আপনি সঠিক টার্গেট কাস্টমার সিলেক্ট করে সঠিক গ্রাহকদের লক্ষ্য করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, ফেসবুকে আপনি বয়স, লিঙ্গ, অবস্থান, ধর্ম, বৈবাহিক অবস্থা ইত্যাদি সিলেক্ট করে টার্গেট কাস্টমার সেট করতে পারেন। অন্যদিকে আপনি কিছু ব্যক্তিকে বাদ দিয়েও (এড তাদের ওয়ালে দেখাবে না) মার্কেটিং করতে পারেন। ফলে এটি আপনাকে সঠিক গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করবে।
মার্কেটিং এর ফলাফল মনিটর করা যায়
ডিজিটাল মার্কেটিং একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনি গ্রাহকদের এক্টিভিটির সঠিক ফলাফল দেখতে পাচ্ছেন। আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে একটি অ্যাড কতটা রিচ করতে পারে, কতটা লাইক-কমেন্ট বা ক্লিক পড়ছে।
কম ব্যয়ে ইনভেস্টমেন্ট উঠে আসে
ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি ব্যপক সুবিধা হল এটি কম ব্যয়ে অধিক মুনাফা নিশ্চিত করে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি প্রয়োগ করে আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস, ই-কমার্স, অনলাইন ফুড ডেলিভারি সার্ভিস এবং আরও অনেকে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সফল হয়েছে।
ডিজিটাল মার্কেটারের ভবিষ্যৎ কি?
শুধু একটা আইডিয়া আর ডিজিটাল মার্কেটিং গ্রোথ হ্যাকিং করে মার্কেটের বড় শেয়ার দখল করে নিতে পারে। সেজন্য ডিজিটাল মার্কেটিং হয়ে গেছে মার্কেটিং এর প্রাণ। ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং পিছনে পড়ে যাচ্ছে আর ডিজিটাল মার্কেটিং যায়গা দখল করছে। ফলে প্রায় সব ধরণের কোম্পানিই ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারছে। সেই সাথে মার্কেটে কদর বাড়ছে ডিজিটাল মার্কেটারদের। কমান্বয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং স্পেশালিষ্ট হয়ে উঠছে একটি লোভনীয় চাকরির মাধ্যম।
অনালাইন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের কথা না বললেই নয়। ডিজিটাল মার্কেটিং এখন ফ্রিল্যান্সারদের এক নাম্বার চয়েজ! হাজারো তরুন আজ ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে স্বাবলম্বী। কেউ ডিজিটাল মার্কেটিং এর আকর্ষণীয় জব করছে কেউবা করছে ফ্রিল্যান্সিং।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রগুলো কি কি
এই আকর্ষণীয় প্রফেশনে যেতে প্রয়োজন স্কিল বা দক্ষতা, নতুন প্রযুক্তির সাথে পরিচিতি ও কঠোর পরিশ্রম। ডিজিটাল মার্কেটিং এর রয়েছে অনেকগুলো ক্ষেত্র যেমন-
মনে রাখবেন ডিজিটাল মার্কেটিং যারা শিখতে চান তাদের সবগুলো সেক্টরে কাজ করতে হবে এমনটা মোটেও ভাবা ঠিক নয়। আপনি যদি ভালভাবে শিখতে পারেন তবে যেকোনো একটি সেক্টরই আপনার জন্য যথেষ্ট হবে, হতে পারে তা ফেসবুক মার্কেটিং বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা ইউটিউব মার্কেটিং বা ইমেইল মার্কেটিং। আবারো বলছি সফল হতে যেকোন একটি সেক্টরে দক্ষতাই যথেষ্ট।
ডিজিটাল মার্কেটার হওয়ার পদক্ষেপগুলো কি কি?
প্রথমত আপনার একটি ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ কম্পিউটার থাকতে হবে।
যেকোনো সমস্যার সমাধান ইউটিউব বা গুগল সার্চ করে বের করার দক্ষতা থাকতে হবে, কেননা প্রায় সব সমস্যার সমাধানই ইউটিউব বা গুগলে আছে।
নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে পরিচিত হতে হবে এবং ডিজিটাল দুনিয়ার যেকোনো আপডেটের সাথে পরিচিত হতে হবে। অনালাইন দুনিয়া সর্বদা পরিবর্তনশীল তাই আপডেট থাকা ছাড়া ডিজিটাল মার্কেটিং করা কষ্টসাধ্য। কেননা আজকে যে বিষয়টি বহুল ব্যবহৃত আগামীকাল হয়তো তা গুগল হতে নিষিদ্ধের ঘোষণা আসতে পারে।
একটা ভালো ট্রেইনার বা ইন্সটিটিউট থেকে ট্রেনিং নেয়া যেতে পারে বা অনালাইনে Udemy বা Lynda বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রেইনিং নেয়া যেতে পারে। যেকোন ট্রেইনার বা ইন্সটিটিউট হতে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার আগে তার ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই করা নেওয়া উচিত। বাংলাদেশে যারা ডিজিটাল মার্কেটিং শেখায় তাদের অধিকাংশই প্রতারক। ফলে ভাল প্রতিষ্ঠান ও ভাল ট্রেইনার না হলে সাফল্য অর্জন করা কঠিন। BITM (Basis Institute of Technology Management) একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান তারা খুব ভালো শেখায় ও কোর্স শেষে স্কলারশিপ প্রদান করে। তাছাড়াও ঢাকায় আরো কিছু ভালো প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
Google Digital Garage হতে ফ্রি ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা যায় সেখান থেকে সার্টিফিকেটও প্রদান করে। Udemy প্রায়ই বিভিন্ন অফার দেয় ও বিভিন্ন ফ্রি কোর্সও তাদের থাকে। Facebook Blueprint হচ্ছে ফেসবুকের অফিসিয়াল ট্রেনিং প্ল্যাটফর্ম। ফেসবুক থেকেও কোর্সে পাশ করে সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।
DigiTal garage Certificate
বেসিক ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার পর আপনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে পারেন। যা আপনার প্রোফাইল ও সিভিকে করবে এক কথায় অসাধারণ। সেগুলো হলো- Digital Garage: Fundamentals of Digital Marketing Certification, Google Analytics IQ Certification, Hootsuite Social Marketing Certification, Google Ads Certification, YouTube Certification, Facebook BluePrint Certification, Twitter Flight School Certification, HubSpot Email Marketing Certification ইত্যাদি। গুগলে সার্চ করলে সবগুলোরই বিস্তারিত পাবেন।
সবগুলো বিষয় একসাথে প্র্যাকটিস না করে নিজের আগ্রহ আছে এমন একটি বিষয়ে মনযোগী হতে হবে। একটি বিষয় মোটামোটি আয়ত্ব হলে বাকি বিষয়গুলোতে আস্তে আস্তে মনযোগ দেয়া যেতে পারে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাথে জড়িত প্রফেশনালদের সাথে সম্পর্ক রাখলে খুবই ভালো। তাদের নিকট হতে সাজেশন ও ভালো গাইডলাইন পাওয়া যেতে পারে।
অনালাইনে ধাপে ধাপে নিজের উপস্থিতি জানান দিতে হবে, যেমন ফেসবুক, ইউটিউব বা নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করে। এমন কোন ডিজিটাল মার্কেটার পাওয়া দুষ্কর হবে যার অনলাইনে উপস্থিতি নেই।
অন্তত তিনমাস পূর্ণ শেখায় মনযোগ দিতে হবে ও পরের তিনমাস প্যাকটিস করতে হবে। মোট ছয় মাস হওয়ার পর বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আইডি খুলে সার্ভিস দেওয়া যেতে পারে। আমাদের দেশের অনেক মানুষই অল্প কিছুদিন শিখে মার্কেটপ্লেসে যাওয়া শুরু করে ফলে তার সার্ভিস খারাপ হয়। ক্লায়েন্ট তাকে নেগেটিভ রিভিউ দেয় ফলে তার মার্কেটপ্লেসে টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে যায়। ফলে ক্লায়েন্ট ও মার্কেটপ্লেস অথোরিটি বাংলাদেশী ফ্রিল্যন্সারদের সম্পর্কে নেভেটিভ ধারণা নেয়। যার ভোক্তভুগী হয় সব বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার। সুতরাং অন্তত ৬ মাস শিখার আগে মার্কেটপ্লেসে কাজের জন্য এপ্লাই না করাই যুক্তিসঙ্গত হবে।
মার্কেটপ্লেসে ভালো করলে তিনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারেন বা ভালো কোম্পানিতে ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে জব করতে পারেন।
মনে রাখবেন শেখার কোন শেষ নেই, শেখার কোন বয়স নেই। শেখা ও প্র্যাকটিস অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই। ডিজিটাল মার্কেটার হওয়া একটি দীর্ঘমেয়াদী বিষয়।
পরিশেষে বলি
ডিজিটাল মার্কেটার হওয়া একটা চলমান অধ্যবসায়ের বিষয়। আমরা চেষ্টা করেছি সল্প কথায় ডিজিটাল মার্কেটার হয়ার পদ্ধতি বর্ণনা করেছি। আমাদের পোস্ট সম্পর্কে যোকোন মন্তব্য বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে লিখে জানান।
ইমেইলের মাধ্যমে একসাথে হাজার হাজার মানুষকে ইমেইল করে পন্য বা সেবা সম্পর্কে মার্কেটিং করার নামই হলো ইমেইল মার্কেটিং। আমাদের দেশে এটি ততটা জনপ্রিয় না হলেও উন্নত বিশ্বে ইমেইল মার্কেটিং বিজ্ঞাপনের একটি জনপ্রীয় মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়। আমরা প্রতিদিন সকালে যেমন ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক করি উন্নত বিশ্বের মানুষ প্রতিদিন সকালে তাদের মেইল চেক করেন। ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হলো ইমেইলের মাধ্যমে মার্কেটিং।
কেন করবেন ইমেইল মার্কেটিং?
২০২০ সালে বিশ্বের প্রায় ৩৯০ কোটি মানুষ ইমেইল ব্যবহার করেন।
শুধু ২০১৯ সালেই প্রতিদিন গড়ে ২৯৩ কোটি মেইল আদান প্রদান হয়েছে।
ইমেইল ব্যবহার করে মার্কেটিং করে গড়ে ১ ডলার খরচ করে ৪২ ডলার লাভ করা সম্ভব হয়েছে।
মাঝারি ব্যবসায়গুলো তাদের কাস্টমারদের ধরে রাখে ৮০% সময় ইমেইল ব্যবহার করে।
ওয়েলকাম ইমেইলের অপেন রেট ৮০% (নতুন কোন কাস্টমারকে স্বাগত জানানো)
ইমেইলের মাধ্যমে রি-মার্কেটিং করে ৬৯% সফলতা লাভ করা সম্ভব হয়েছে।
কার্যকর ইমেইল ক্যম্পেইন এর ব্যয় অন্য মার্কেটিং ফর্মগুলির চেয়ে অনেক কম হতে পারে এমনকি ফেসবুক মার্কেটিং হতেও কম।
কোনও বিজ্ঞাপনের ফি, মুদ্রণ বা মিডিয়া স্পেস ব্যয় নেই।
আপনার মার্কেটিং এর তালিকাটি এমন লোকদের সমন্বয়ে গঠিত হবে যারা আপনার ওয়েবসাইটে সাবস্ক্রাইব করেছে বা আপনি টার্গেট কাস্টমারদের ইমেইল যোগাড় করে তাদের মেইল করেছেন। টার্গেট কাস্টমার হওয়ার ফলে তাদের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
সুন্দর ইমেইল ট্যামপ্লেট ব্যবহার করে মার্কেটিং করলে, সেলস বাড়ার পাশাপাশি ব্র্যান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি পায়, ওয়েবসাইটে প্রচুর ট্রাফিক (ভিজিটর) আসে।
ইমেইল ক্যম্পেইন এর মাধ্যমে আপনি মেইলগুলো পারসোনালাইজড করতে পারেন। অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যক্তির নাম উল্ল্যেখ করে মেইল করতে পারেন। সাধারণ মেইলের চেয়ে পারসোনালাইজড মেইলের ওপেন রেট অনেক বেশি।
গ্রাহকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের জন্য Email Marketing এর কোন বিকল্প নেই।
অন্যান্য ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতিগুলোর মধ্যে Email Marketing সবচেয়ে সহজ ও সবচেয়ে সময় সাশ্রয়ী।
আপনার ব্যবসার প্রমোশন করুন ইমেইলে
পণ্য বা সেবা বিক্রয় : ব্যবসায়ের পণ্য বা সেবা বিক্রয় করতে পারেন।
আপডেট: পণ্য বা সেবার কোন আপডেট থাকলে বা নতুন কোন পন্য আসলে কাস্টমারদের আপডেট জানাতে পারেন।
ইভেন্ট বা ফেস্টিভ্যাল: বিশেষ দিন উপলক্ষে (যেমন ঈদ, বইমেলা, প্রদর্শনী ইত্যাদি উপলক্ষে ব্যবসায়ের প্রমোশন করতে পারেন বা বিভিন্ন অফার দিতে পারেন।
কনফারমেশন: গ্রাহক অর্ডার করলে বা ক্রয় করলে তাকে ফিরতি মেইলে কনফার্ম করতে পারেন।
শুভেচ্ছা বা ধন্যবাদ জ্ঞাপন: গ্রাহক সাবস্ক্রাইব করলে বা কোন সেবা গ্রহণ করলে তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে পারেন।
রি-মার্কেটিংঃ কোন গ্রাহক পূর্বে ইচ্ছা পোষণ করলে বা আগ্রহী হলে তাদের কাছে রি-মার্কেটিং বা পুনরায় মার্কেটিং করতে পারেন।
MailChimp এর মাধ্যমে ইমেইল মার্কেটিং
ইমেইল বিপনন বা মার্কেটিং করার নিয়ম
পারসোনাল ইমেইল আইডি থেকে ইমেইল ক্যম্পেইন করা যায় না। অর্থাৎ আপনি Gmail, Yahoo, Microsoft Outlook ইত্যাদি ব্যবহার করে ইমেইল ক্যম্পেইন করতে পারবেন না।
Gmail, Yahoo, Microsoft Outlook ইত্যাদি সার্ভিসগুলো ফ্রি হওয়ার কারনে আপনি একটি নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি ইমেইল পাঠাতে পারবেন না। যদি আপনি এসব ফ্রি সার্ভিস ব্যবহার করে ইমেইল মার্কেটিং করেন মানে হাজার হাজার মেইল পাঠান তবে আপনার একাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হতে পারে।
সেজন্য আপনার প্রয়োজন হবে বিজনেস মেইল (Business Mail) যেমন abcd@gamil.com একটি পাসসনাল মেইল কিন্ত info@backenddigital.com একটি বিজনেস ইমেইল। সুতরাং পারসনাল ইমেইল এক্ষেত্রে অর্থহীন, প্রয়োজন বিজনেস ইমেইল।
কিভাবে একসাথে হাজার হাজার কাস্টমারদের ইমেইল পাঠিয়ে মার্কেটিং করা যায়?
ইমেইল ক্যম্পেইন করার জন্য বেশ কিছু ওয়েবসাইট আছে যারা প্রফেশনালি মার্কেটিং এর সার্ভিস দিয়ে থাকে। এখন আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব এমন ১০ টি ওয়েবসাইটের সাথে।
ইমেইল ক্যম্পেইন বা মার্কেটিং এর অন্যতম একটি কাজ হলো প্রচুর পরিমাণ ইমেইল কালেক্ট করা। কারণ এই ইমেইল এড্রেসগুলোতেই আপনি পণ্য সম্পর্কে আপনার বক্তব্য পাঠাবেন এবং তাকে ক্রয় করার জন্য উৎসাহিত করবেন। যত বেশি ইমেইল সংগ্রহ করা যাবে বিক্রির সম্ভাবনা তত বেশি হবে। ইমেইল এড্রেস কালেক্ট কয়েকটা পদ্ধতি আলোচনা করা হলঃ
আপনার ওয়েবসাইটের মাঝে সাবস্ক্রাইব অপশন যুক্ত রাখুন যেন ইমেইল এড্রেস কালেক্ট করা যায় এবং অনুমতি নিন ভবিষ্যতে ইমেইল পাঠানোর।
বিভিন্ন কনটেষ্ট আয়োজন করুন যেখানে ব্যবহারকারীদের মেইল ড্রপ করতে হয় এবং মেইলগুলো সংগ্রহে রাখুন।
প্রফেশনাল ব্যক্তিদের মেইল এড্রেস কালেক্ট করার জন্যব Yelp/ LinkedIn ইত্যাদি ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন।
Google Search করেও মেইল এড্রেস সংগ্রহ করা যায়।
বিভিন্ন Directory হতেও মেইল এড্রেস সংগ্রহ করা যায়।
২। টেক্সট এবং ইমেইল ট্যামপ্লেট তৈরি করা
যেহুতু আপনি হাজার হাজার মানুষকে একসাথে ইমেইল করবেন সুতরাং আপনার ইমেইল যেন খুব প্রফেশনাল হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই প্রয়োজন-
সুন্দর ইমেইল ট্যামপ্লেট ডিজাইন করা ( শুধু ড্র্যাগ এন্ড ড্রপ করেই এখন সুন্দর সুন্দর ট্যামপ্লেট বানানো যায়) । অনেক ক্ষেত্রে ফ্রি কিছু সুন্দর ট্যামপ্ল্যাট থাকে সেগুলোও ব্যবহার করা যায়।
ইমেইলে কি লিখবেন সেটা ঠিক করুন।
Call To Action (CTA) বাটন যুক্ত করুন, অর্থাৎ Buy Now/ Shop Now/ Learn More/ Download App ইত্যাদি হলো কল টু একশন বাটনের উদাহরণ।
রেসপন্সিভ (Responsive), ট্যামপ্লেট তৈরি করুন। অর্থাৎ আপনার ট্যামপ্লেটটি মোবাইল, ট্যাব, পিসি সব কিছুরতেই যেন প্রদর্শিত হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে থিমফরেস্ট থেকে পেইড রেস্পনসিভ ট্যামপ্লেট ডিজাইন কিনে নিতে পারেন।
৩। ইমেইল ডেলিভারী দেয়া
ইমেইল ক্যম্পেইন বা মার্কেটিং এর শেষ ধাপ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো কার্যকরভাবে ইমেইল ডেলিভারী করা।
বিজনেস ইমেইল ব্যবহার করুন ইমেইল পাঠানোর জন্য।
ইমেইলের মাধ্যমে মার্কেটিং এর সেবা দেয় এমন সাইট সিলেক্ট করুন ( Mailchimp, Aweber, Get Response, Constant Contact ইত্যাদি)
মনে রাখবেন Mailchimp এ একবারে ২০০০ মেইল ও প্রতিমাসে ১২,০০০ মেইল ফ্রি পাঠানো যায়। তবে অন্যান্য সাইটগুলোতে ফ্রি সার্ভিস নেই। কিন্ত পেইড মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ইমেইল পাঠানোর কোন লিমিট নেই।
সাধারণত প্রফেশনাল ইমেইল মার্কেটাররা ইমেইল পাঠানোর জন্য SMTP (Simple Mail Transfer Protocol) সার্ভার ব্যবহার করে। ফ্রি সার্ভারের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে তাই SMTP সার্ভার ব্যবহার করাই উত্তম।
ইমেইল ডেলিভারি দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখবেন স্প্যামিং যেন না হয়।
পরিশেষে বলতে চাই
ইমেইল ক্যম্পেইন বা মার্কেটিং শিখতে হলে শুধু ব্লগ পড়ে শিখা সম্ভব নয়, সেজন্য আপনি ইউটিউবে ইমেইল মার্কেটিং এর টিউটোরিয়াল দেখতে পারেন। যেকনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন। আমরা উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো, ইনশা’আল্লাহ।