এসইও করতে হলে অনেক সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের টুলের সাহায্য নিয়ে থাকি। এসব টুল ইউজ করেই আমরা সাধারণত আমাদের এসইও-এর ডিসিশন নিয়ে থাকি। কিন্তু কথা হচ্ছে টুলের ইনসাইট/ স্কোর/ ডাটা এসব কতটুকু গ্রহণযোগ্য? টুলগুলোর উপর ভিত্তি করে আমাদের কোন ডিসিশন নেয়া কি ঠিক হবে কিনা? বা কিভাবেই আমরা টুলের ইনসাইটকে গুগলের রিকমেন্ডডেশনের সাথে কম্পেয়ার করবো? তাহলে চলুন জেনে আসি বিষয়গুলো।
কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি বা এসইও ডিফিকাল্টি
একটা কিওয়ার্ড কতটা কম্পিটিটিভ র্যাংক করানোর জন্য তাই নির্দেশ করে কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি। কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি যত কম হবে ততই সেই কিওয়ার্ড র্যাংক করানো ইজি হবে। এখন কথা হচ্ছে সঠিক কিওয়ার্ড খুঁজে পেতে কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টিই কি একমাত্র বিবেচ্য বিষয়?
উত্তর হচ্ছে না। শুধুমাত্র কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি দেখেই আমরা একটা কিওয়ার্ড সিলেক্ট করতে পারি না। কারণ একেক টুল একেক ধরণের ডাটা শো করে। সব টুলের কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি স্কোর কখনোই এক হবে না। যেমন Ahrefs এ আপনি দেখতে পেলেন একটা কিওয়ার্ডের ডিফিকাল্টি ৫ কিন্তু Semrush এ সেই কিওয়ার্ডের ডিফিকাল্টি হতে পারে ২৫! অন্য কোন টুল দিয়ে চেক করলে অবশ্যই সেখানেও আপনি কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টির ভিন্নতা পাবেন।
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে সঠিক কিওয়ার্ড কিভাবে যাচাই করা উচিত?
- অবশ্যই গুগলে ম্যানুয়ালি সার্চ করে দেখতে হবে। (যেই লোকেশনে র্যাংক করাতে চান সেই লোকেশন থেকে সার্চ করতে হবে)
- সার্পে (SERP) কারা র্যাংক করেছে ও তাদের ওয়েবসাইটের অথোরিটি, ইনডেক্স পেইজ ইত্যাদি চেক করতে হবে।
- সার্পে (SERP) কম্পিটিটররা সেই কিওয়ার্ডের টপিক কতটুকু কভার করছে।
- সার্পে কোন দুর্বল সাইট, সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট, ফোরাম বা কোন User Generated Content আছে কিনা চেক করতে হবে।
- সার্পে (SERP) কম্পিটিটররা কতটুকু ও কোন কোন সোর্স থেকে ব্যাকলিংক পেয়েছে।
- সার্পে (SERP) কম্পিটিটরদের সেই কিওয়ার্ডে টপিক্যাল অথোরিটি কতটুকু। (এটা আসলে টোটালি এক্সপেরিয়েন্সডরাই অনুমাণ করতে পারবে, এজন্য কোন টুল নেই)
ট্রাফিক – থার্ড পার্টি টুল
একটা সাইটের ট্রাফিক বিভিন্ন টুল দিয়ে চেক করা যায়। সেটি হতে পারে Semrush, Ahrefs, Ubersuggest, Similarweb ইত্যাদি। এক্ষেত্রে বলে রাখা প্রয়োজন কোন ধরণের থার্ড পার্টি টুলই এক্সাক্ট ডাটা দিতে পারে না। আপনি যদি এক্সাক্ট ডাটা দেখতে চান তবে অবশ্যই Google Analytics চেক করতে হবে। এমনও হতে পারে একটা সাইটের ট্রাফিক ১০,০০০ কিন্তু থার্ড পার্টি টুল দেখাচ্ছে ৫,০০০!
আমরা বিভিন্ন ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে একটা ওয়েবসাইটের ট্রাফিক চেক করে থাকি। সেটা হতে পারে ব্যাংকলিংক নেয়ার ক্ষেত্রে, অন্য ওয়েবসাইটের সাথে কোলেবরেশন করতে ইত্যাদি।
কিন্তু আপনি যদি থার্ড পার্টি টুল ইউজ করে সিদ্ধান্ত নেন সেটা কখনোই এক্সাক্ট হবে না। সেক্ষেত্রে আমরা একাধিক থার্ড পার্টি টুলের সাহায্য নিতে পারি। এক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ওয়েবসাইটের ট্রাফিক সম্পর্কে আমাদের বেটার আন্ডারস্ট্যান্ডিং হবে।
ব্যাকলিংক – থার্ড পার্টি টুল
ট্রাফিকের মতই বিভিন্ন টুল দ্বারা আমরা ব্যাকলিংক চেক করে থাকি। এক্ষেত্রেও সেম কথা প্রযোজ্য কোন থার্ড পার্টি টুলই ১০০% নিখুঁত ব্যাকলিংক দেখাতে পারবে না। একটা সাইটের ব্যাকলিংক যত বেশি হবে তার ডোমেইন অথোরিটি তত বেশি হবে। ব্যাকলিংক যদি অপ্রাসঙ্গিকও হয় তবুও কিন্তু একটা সাইটের ডোমেইন অথোরিটি বাড়বে।
ধরে নিন আপনি একটা সাইটের ব্যাকলিংক থার্ড পার্টি টুলে চেক করে দেখলেন ব্যাকলিংক ১০০০ এবং রেফারিং ডোমেইন ১০০। কিন্তু আপনি সার্চ কনসোলে চেক করে দেখলেন ব্যাকলিংক ২০০ ও রেফারিং ডোমেইন ২৫।
এর মানে কি? এর মানে হলো, ব্যাকলিংক যতই জেনারেট হোক না কেন গুগল কিন্তু সবগুলো কাউন্ট করেনি। গুগল যতগুলো ব্যাকলিংক কাউন্ট করেছে সেগুলাই সেই সাইটের এক্সাক্ট ব্যাকলিংক।
স্প্যাম স্কোর
MOZ বা Ubersuggest দ্বারা আমরা স্প্যাম স্কোর চেক করতে পারি। এই MOZ বা Ubersuggest কিন্তু থার্ড পার্টি, মানে তারা গুগল বা কোন সার্চ ইঞ্জিন নয়। আসলে এই স্প্যাম স্কোর কি নির্দেশ করে? সাধারণত একটা ওয়েবসাইট যেসব এক্সটার্নাল বা থার্ড পার্টি সাইট থেকে লিংক পেয়েছে সেই লিংকের মানগুলোই আসলে স্প্যাম স্কোর নির্দেশ করে (আসলে আরো কিছু বিষয় আছে) । যেমন একটা সাইট, ভালো ও কোয়ালিটিফুল লিংক বিল্ডিং করলে তার স্প্যাম স্কোর কম হবে। কিন্তু অপ্রাসঙ্গিক ও সম্ভাব্য গুগলের পেনাল্টি খাওয়া সাইট থেকে লিংক বিল্ডিং করলে স্প্যাম স্কোর বাড়বে।
এখানে বলে রাখা ভালো স্প্যাম স্কোর কিছুটা বাড়লেই সেই ওয়েবসাইট স্প্যামিং করছে বলে ধারণা করা ঠিক নয়। স্প্যাম স্কোর বাড়ার মানে হচ্ছে ঐ ওয়েবসাইটে স্প্যামি ব্যাকলিংক জেনারেট হচ্ছে। সেটা কম্পিটিটর ইচ্ছা করেও জেনারেট করতে পারে।
আমরা ব্যাকলিংক নেয়ার ক্ষেত্রে দেখি ওয়েবসাইটের স্প্যাম স্কোর কত। কিংবা এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার ক্ষেত্রেও দেখি এই স্প্যাম স্কোর। কিন্তু এই স্প্যাম স্কোর গুগলের ডিকশনারিতে নেই। এরকম অনেক সাইট আছে যাদের স্প্যাম স্কোর ১০ এর বেশি কিন্তু আসলে সেই সাইটগুলো স্প্যামি নয়। গুগল ২০২২ সালে লিংক স্প্যামিং এর গাইডলাইন দিতে একটি আপডেট নিয়ে আসে। সেখানে গুগল ক্লিয়ার করছে যে কোন ধরনের সাইট থেকে লিংক নেয়া যাবে বা কোন ধরণের সাইট থেকে লিংক নেয়া যাবে না।
এখানে তাহলে ক্লিয়ার করা উচিত স্প্যাম স্কোর দেখে কি আমদের লিংক দেয়া বা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া কি ভুল? উত্তর হচ্ছে, না পুরোপুরি ভুল না। কিন্তু এটাও বলা প্রযোজ্য যে স্প্যাম স্কোরই একমাত্র নির্দেশক নয় একটি সাইটের স্প্যামিং ক্যালকুলেট করতে। কেউ যদি এক কথায় বলে দেয় ৫% এর বেশি স্প্যাম স্কোর হলেই ঐ সাইট থেকে লিংক নেয়া যাবেনা কথাটি সব সময় সত্য নাও হতে পারে। তাই বলা যায়, একটা সাইটের স্প্যাম স্কোর জানা আমার সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সহজ করে মাত্র।
ডোমেইন অথোরিটি
MOZ বা Ubersuggest দ্বারা আমরা একটা সাইটের ডোমেইন অথোরিটি চেক করতে পারি। সাধারণত একটা সাইট কতগুলো সাইট থেকে লিংক পেলো বা কত ডোমেইন অথোরিটির সাইট থেকে লিংক পেলো তার মধ্যমেই ডোমেইন অথোরিটি ক্যালকুলেট করা হয়। যদিও আরও কিছু বিষয় দেখা হয় ডোমেইন অথোরিটি ক্যালকুলেট করতে।
স্প্যাম স্কোরের মত ডোমেইন অথোরিটি দেখেও আমরা সাধারণত লিংক বিল্ডিং করে থাকি। কিন্তু বেশি ডোমেইন অথোরিটি বলেই সেই সাইট পাওয়ারফুল সাইট কথাটি সত্য নয়। একটা ডোমেইন এক্সপায়ার্ড হলে সেই ডোমেইনের লিংকগুলো কিন্তু জীবিত থাকতে পারে। ফলে এমনও হতে পারে সদ্য তৈরি হওয়া একটা সাইটের ডোমেইন অথোরিটি ৩০/৪০/৫০ বা আরও বেশি! এর কারণ সেই সাইটটি এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কিনে ওয়েবসাইট বিল্ড করেছে।
এখন আপনি যদি নতুন তৈরি হওয়া সাইটের গতিবিধি না দেখেই শুধুমাত্র ডোমেইন অথোরিটি দেখেই লিংক নেন তাহলে সেটা ভালো সিদ্ধান্ত হবে না। একটা কম ডোমেইন অথোরিটির সাইট কিন্তু রিলেভেন্ট ও ট্রাফিক ভালো, আপনি সেখান থেকে ব্যাকলিংক নিতে পারেন। কিন্তু ডোমেইন অথোরিটি বেশি হলেও ইরিলেভেন্ট সাইট থেকে মোটেও ব্যাকলিংক নেয়া উচিত নয়।
এসইও প্লাগিনের গ্রিন সিগন্যাল
অন পেইজ এসইও এবং অন্যান্য বেসিক কিছু টেকনিক্যাল এসইও ইস্যু ফিক্স করতে এসইও প্লাগিনগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাধারণত আমরা ধরে নিই গ্রিন সিগন্যাল আসলেই আমাদের অন পেজ এসইও খুব ভালোভাবেই হয়েছে। কিন্তু এই ধারণাটাও ঠিক না।
একজন বিগিনারের কাছে এসইও প্লাগিনগুলো অনেকটা বস (Boss)। একজন এক্সপার্টের কাছে এসইও প্লাগিনগুলো এসিস্ট্যান্ট। কারণ একজন বিগিনার এসইও-এর বেস্ট প্র্যাকটিসগুলো হয়তো ভালোভাবে জানে না তাই এসইও প্লাগিনের গাইডলাইনগুলো তাকে ফলো করতে হয়। কিন্তু একজন এক্সপার্ট কখনোই গ্রিন বা রেড সিগন্যাল নিয়ে চিন্তিত না বরং তিনি এসইও এর কোর বিষয়গুলো প্রয়োগ করেন তার কন্টেন্টে। এতে করে কয়েকটা রেড সিগন্যাল দিলেও তিনি উদ্বিগ্ন হন না!
গ্রিন সিগন্যালগুলো অনেকক্ষেত্রেই প্যারাসিটামল তিন বেলার মত! যেমন সাইটের কন্টেন্ট যেকোন ক্যাটাগরিরই হোক না কেন প্লাগিনগুলো সব ক্ষেত্রেই সেম সিগন্যাল প্রয়োগ করে। যেমন, একটা মানি আর্টিকেল লিখলাম ৫,০০০ ওয়ার্ডের। সেই আর্টিকেলে যদি প্লাগিনের গাইডলাইন ফলো করি তাহলে আমাকে ফোকাস কিওয়ার্ড ৩০ বার ইউজ করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে আমি সেখানে সর্বমোট ৫ বারের বেশি ফোকাস কিওয়ার্ড ইউজ করবো না। এক্ষেত্রে রেড সিগন্যাল আসলেও আমার কিছু করার নেই।
টেক্সট রিডেবিলিটি স্কোর
ইয়োস্ট এসইও টেক্সট রিডেবিলিটি স্কোর প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ রিডেবিলিটি সাজেশনই লজিক্যাল। কিন্তু একটা রাইটিং আসলেই ভালো হয়েছে কিনা সেটা একজন নেটিভ (স্থানীয় ভাষী) সবচেয়ে ভালো বুঝবেন। আপনি যদি ইংলিশে নেটিভ হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার রাইটিং ভালো হলে ইয়োস্টের রিডেবিলিটির দিকে আপনার তাকানোর প্রয়োজন নেই।
কিন্তু একজন বিগেনার বা ইন্টারমিডিয়েট লেভেলের একজন রাইটারের জন্য টেক্সট রিডেবিলিটি স্কোর চেক করা প্রয়োজন। জাস্ট বেসিক কয়েকটা গাইডলাইন ফলো করলেই টেক্সট রিডিবিলিটি স্কোর বাড়ানো যায়। যেমন-
- Simple Sentence এ আর্টিকেল লিখা
- যত বেশি Active Sentence ইউজ করা
- প্রতিটি প্যারাগ্রাফ শর্ট করা (১৫০ শব্দের মধ্যে)
- আর্টিকেলে বেশি বেশি Transition Words ইউজ করা
- যতটা সম্ভব Short Subheading ইউজ করা
- Uncommon Word বা অপ্রচলিত শব্দ ইউজ না করা
- প্রতিটি প্যারাগ্রাফের শুরুতেই Repetitive শব্দ বা বাক্য ইউজ না করা। (একটা কমন ভুল করে থাকি আমরা, একই ধরণের বাক্য বার বার ইউজ করি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই Repetitive শব্দ বা বাক্য প্যারাগ্রাফের শুরুতে ইউজ করা হয়)
শেষ কথা
শেষ কথা হলো এসইও টুলগুলো আমাদের বিভিন্ন ইনসাইট বা ডাটা দিয়ে হেল্প করে থাকে। আমরা সেই ডাটাগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সরাসরি ব্যবহার না করে বরং এসইও এর কোর রিকমেন্ডেশন ফলো করবো। সেজন্য টুল নির্ভর নলেজ অর্জন করার আগে গুগলের রিকমেন্ডেশনগুলো গুগল সার্চ সেন্ট্রাল থেকে জেনে আসা প্রয়োজন।
Yoast SEO – 🟢🟢🟢 গ্রিন সিগন্যালগুলো অনেকক্ষেত্রেই প্যারাসিটামল তিন বেলার মত! Hahaah……..
Real Life problem vs reality is written on here. Thnx
These SEO rules & tactics are very helpful in making decisions. Thank you so much